তবে বাকি বিধানগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার আগামী সংসদের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
সংসদ আইন অনুসারে জনগণের মতামত নিয়ে বিধানগুলো সংশোধন, পরিমার্জন ও পরিবর্তন করতে পারবে।
দুটি রিটে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
পরে ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ আবেদনকারীর আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার বিধান বাতিল হলো; সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ এবং সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য সংক্রান্ত ৭ ক এবং ৭ খ বাতিল হলো।
তিনি বলেন, মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের বিধান নিয়ে হাইকোর্টের ক্ষমতা কমানোবিষয়ক ৪৪ (২) বাতিল করা হলো; এ ছাড়া ১৪২ অনুচ্ছেদে গণভোটের বিধান বাতিল করার বিষয়টি বাতিল করা হয়েছে।
ফলে সংবিধানের প্রস্তাবনা ও কিছু অনুচ্ছেদ সংশোধনে আজকের রায়ে গণভোটের বিধান ফিরে আসছে।
রায়টিকে ঐতিহাসিক বলে এ আইনজীবী বলেন, ৭ ক ও খ, ৪৪ (২) ও ১৪২ অনুচ্ছেদ বিষয় আজকের রায়ের ফলে বাস্তবায়িত হয়ে গেলো।
তবে সংসদের মাধ্যমে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হলো- সেটির প্রতিবন্ধকতা আজকে পার হলাম। তবে বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বে যে রায় (তত্ত্বাবধায়ক অবৈধ) সেটির পুনর্বিবেচনা পরিবর্তিত হতে হবে ব্যবস্থাটা ফিরে আসার জন্য। সেটি জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে শুনানি হবে। যদি রিভিউ আমাদের পক্ষে আসে, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরবে।
যেসব বিষয় বাতিল করা হলো- এক. সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ সংক্রান্ত ৭ ক অনুচ্ছেদে (১) বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি শক্তি প্রদর্শন বা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বা অন্য কোনো অসাংবিধানিক পন্থায় -
(ক) এ সংবিধান বা এর কোনো অনুচ্ছেদ রদ, রহিত বা বাতিল বা স্থগিত করলে কিংবা তা করার জন্য উদ্যোগ নিলে বা ষড়যন্ত্র করলে; কিংবা (খ) এ সংবিধান বা এর কোনো বিধানের প্রতি নাগরিকের আস্থা, বিশ্বাস বা প্রত্যয় পরাহত করলে কিংবা তা করার জন্য উদ্যোগ নিলে বা ষড়যন্ত্র করলে- তার এ কাজ রাষ্ট্রদ্রোহ হবে এবং ওই ব্যক্তি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে দোষী হবে।
(২) কোনো ব্যক্তি (১) দফায় বর্ণিত- (ক) কোনো কাজ করতে সহযোগিতা বা উসকানি দিলে; কিংবা (খ) কার্য অনুমোদন, মার্জনা, সমর্থন বা অনুসমর্থন করলে- তার এরূপ কাজও একই অপরাধ হবে।
(৩) এ অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধে দোষী ব্যক্তি প্রচলিত আইনে অন্যান্য অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ দণ্ডে দণ্ডিত হবে।
সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলী সংশোধন অযোগ্য সংক্রান্ত ৭ খ-তে বলা হয়েছে, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে যা কিছুই থাকুক না কেন, সংবিধানের প্রস্তাবনা, প্রথম ভাগের সব অনুচ্ছেদ, দ্বিতীয় ভাগের সব অনুচ্ছেদ, নবম-ক ভাগে বর্ণিত অনুচ্ছেদসমূহের বিধানাবলী সাপেক্ষে তৃতীয় ভাগের সব অনুচ্ছেদ এবং একাদশ ভাগের ১৫০ অনুচ্ছেদসহ সংবিধানের অন্যান্য মৌলিক কাঠামো সংক্রান্ত অনুচ্ছেদগুলোর বিধানাবলি সংযোজন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ কিংবা অন্য কোনো পন্থায় সংশোধনের অযোগ্য হবে।
দুই. মৌলিক অধিকার বলবৎকরণ সংক্রান্ত ৪৪ (২)- এ বলা হয়েছে, এ সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটিয়ে সংসদ আইনের মাধ্যমে অন্য কোনো আদালতকে তার এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ওই সব বা তার যেকোনো ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করতে পারবে।
তত্ত্বাবধায়ক সংক্রান্ত ৫৮ ক অনুচ্ছেদ বিলুপ্তি এবং ক পরিচ্ছেদ এ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্তি। এ ছাড়া সংবিধানের বিধান সংশোধনের ক্ষমতা সংক্রান্ত গণভোটের বিধান বাতিল সংক্রান্ত ১৪২ এর অনুচ্ছেদ। আদালত বলেছেন, গণভোট সংক্রান্ত ১২তম সংশোধনী এখানে বহাল হবে।
এর আগে ৪ ডিসেম্বর পৃথক রিটে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়।
২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
এ ছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন সংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়; সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়।
অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধে দোষী করে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও যুক্ত করা হয়। আগে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার বিধান থাকলেও ওই সংশোধনীতে পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়টি সংযোজন করা হয়।
এই সংশোধনী বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি। গত ১৯ আগস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।
পরে এই রুল সমর্থন করে সহায়তাকারী (ইন্টারভেনার) হিসেবে যুক্ত হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গণফোরাম, বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা। তাদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
এ ছাড়া নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও রিট করেন।
9 ঘন্টা আগে
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এর (অন্তর্ভুক্ত) সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ এর সদস্য পদ পেলেন সাংবা...
16 ঘন্টা আগে
rch সহকারী শিক্ষক পদে চূড়ান্ত নিয়োগের দাবিতে জাদুঘরের সামনে সুপারিশপ্রাপ্তদের মহাসমাবেশ স্টাফ করেস...
16 ঘন্টা আগে
বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানকালের ঘটনা নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের পর শেখ হাসিনার রাজনীতি শেষ হয়ে গিয়েছ...
16 ঘন্টা আগে
কাজের ক্ষেত্রে কারো রক্ত চক্ষু বা ধমক আমলে না নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ই...
17 ঘন্টা আগে
বাংলাদেশ রিপোর্টাস ক্লাব ট্রাষ্ট নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ খন্দকার শাহ আলম ভাই ফজর...
1 দিন আগে
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এর (অন্তর্ভুক্ত) সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জ এর সদস্য পদ পেলেন সাংবা...
1 দিন আগে
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি খ্যাত চট্টগ্রামেও পালিত হচ্...
1 দিন আগে
নগরের বিভিন্ন থানায় গত ২৪ ঘণ্টায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ১৯ জন নেতা-কর্...
16 ঘন্টা আগে