আমিতো এখন দখলদার হয়ে গেছি বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) নারায়ণগঞ্জের আলী আহম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে 'নদীতে শিল্প দূষণ রোধে করণীয়' শীর্ষক আলোচনা সভায় একথা বলেন তিনি।
মেয়র আইভী বলেন, ২০০৯ সালে আমরা একটি পুকুর উদ্ধার করতে না পেরে বেলার স্মরণাপন্ন হয়েছিলাম। আমাকে মামলা করে বেলার সহযোগিতা নিয়ে পুকুরটি উদ্ধার করতে হয়েছে। আমরা তাদের সাথে কাজ করছি।
নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, সাভার এ শহরগুলো বিভিন্ন কারণে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ঢাকার আশেপাশের শহর না বাঁচলে ঢাকা বাঁচবে না। এটা সবাই জানি। কিন্তু কাজ করবে কে। কাজের লোক নেই। সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। আমরা বহুবার এসকল কথা বলে এসেছি। আমরা শহরো জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে মেয়র হয়েছি, আমাদের হাতে কতটুকু পাওয়ার আছে। নারায়ণগঞ্জের অবস্থা দেখেন, কিছুই করতে পারছি না।
মেয়র বলেন, হাইকোর্ট ২০০৯ সালের আদেশ কেউ কী পালন করেছে। আমাদের মন্ত্রী এটা নিয়ে মিটিং পর্যন্ত করেছে৷ কিন্তু সেটা আমাদের দেয়া হয়নি। আমরা বাধ্য হয়েছি সেটা দখল করতে। আমিতো এখন দখলদার হয়ে গেছি। রেলওয়ের জায়গা দখল করে রাসেল পার্ক করেছি, নদীর পাড়ে গাছ লাগিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এগুলো তো হওয়ার কথা ছিল না। হাইকোর্টের আদেশ আপনি কেন মানলেন না।
সমন্বয়হীন ভাবে তারা কাজ করছে। আমাদের বলাও হচ্ছে না। ইটিপি চলছে না আপনারা বন্ধ করে দিন। আমাদের প্ল্যান ছিল গভীর ড্রেন করে একটা পয়েন্টে নিয়ে সেখানে ইটিপি নিয়ে পানি পরিষ্কার করে নদীতে ফেলা হবে। কেউ কারও সাথে কথাও বলছে না। আপনি আমার শহরে এসে মাতব্বরি করছেন। এগুলোর জ্বালায় আমরা অস্থির। আইন সঠিকভাবে মানলে এতকিছুর তো দরকার হয় না। সিস্টেমের মধ্যে থাকলে এতকিছুর প্রয়োজন হয় না।
এগারোটা সিটি করপোরেশনের একই আইন হওয়া উচিত। সেখানে একেক সিটি করপোরেশনের জন্য একেক আইন। জরিমানা নেই এটা তো হতে পারে না। আমাদের ড্রেনের সব পানি নদীতে যাচ্ছে। দেশে কোথাও কোন ইউনিক মডেল নেই। আমরা সর্বপ্রথম বলেছিলাম আমরা ইটিপির মাধ্যমে পানি পরিশোধন করে নদীতে ফেলতে চাই।
ট্যাক্সের অনেক টাকা বাকি। নারায়ণগঞ্জের মানুষ ট্যাক্স দিতে চায় না। ফান্ড না থাকলে কাজ করবো কীভাবে। নদীর পাড় কারা দখল করে রেখেছে। তারা কী সাধারণ মানুষ, তাদের হাত অনেক লম্বা। সব আন্দোলন আমাকে কেন করতে হবে। আপনাদেরও জাগতে হবে। নদীর পশ্চিম পাড়ে এই ডকইয়ার্ড কাদের আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখুন। নদীর পারে রাস্তা করতে এগারোটা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি। বলেছিলাম আমি ভাংচুর করবো না। আপনারা ডিজাইন দিন। আপনাদের ডিজাইন মত কাজ করবো।
তিনি আরো বলেন, সবসময় শুধু শুনি কাজ করতে হবে। এখন আমাদের থামতে হবে। সিঙ্গাপুর আজ সিঙ্গাপুর হয়েছে তাদের প্ল্যানিংয়ের জন্য। তারা সকলকে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছে। আইনকে শক্তিশালী করতে হবে।